পশ্চিম আফ্রিকার দেশ লাইবেরিয়া। অর্থনৈতিক দৈন্যদশাগ্রস্ত দেশটি কখনো ফুটবল বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করতে পারেনি। কিন্তু দেশটিরই একজন কিংবদন্তি ফুটবলার ছিলেন জর্জ উইয়াহ। যিনি ২০১৮ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত লাইবেরিয়ার ২৫ তম প্রেসিডেন্ট ছিলেন।
চোটের কারণে চলতি মৌসুম শেষ হয়ে গেছে। তবে গত মৌসুমে যা করেছেন, সেটির পুরস্কার পেলেন রদ্রি। পেলেন প্রথম ব্যালন ডি’অরের স্বাদ। ম্যানচেস্টার সিটির ইতিহাসে প্রথম ব্যক্তিগত মর্যাদার এই বর্ষসেরা পুরস্কার জিতলেন স্পেনের ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার।
খবরটা আগেই পেয়ে গিয়েছিল রিয়াল মাদ্রিদ। ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের হাতে উঠছে না ব্যালন ডি’অর। রিয়ালও সেটি জেনে আর প্যারিস সফরে যায়নি। অথচ ৩০ জনের সংক্ষিপ্ত তালিকায় ছিল লস ব্লাঙ্কোসদেরই ৭ জন। বর্ষসেরা ক্লাব হয়েছে রিয়াল। আর বর্ষসেরা কোচ রিয়ালই কার্লো আনচেলত্তি।
লিওনেল মেসি ও ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো পরবর্তী যুগে কার হাতে উঠতে যাচ্ছে বর্ষসেরার পুরস্কার ব্যালন ডি’অর? সেটি নিয়ে বেশ কয়েক মাস ধরে চলছিল আলোচনা-গুঞ্জন। অবশেষে সেই প্রশ্নের উত্তর এলো আজ রাতে।
সংক্ষিপ্ত তালিকা প্রকাশ হওয়ার পর থেকেই ভিনিসিয়ুস জুনিয়র ব্যালন ডি’অর জিতবেন বলে প্রত্যাশা করছিলেন ফুটবল বিশ্লেষক, কোচ ও সাবেক-বর্তমান ফুটবলাররা। আজ বাংলাদেশ সময় আজ রাতেই ঘোষণা হবে ব্যালন ডি’অর জয়ীর নাম। কিন্তু তার কয়েক ঘণ্টা আগেই বদলে গেল দৃশ্যপট।
ভিনিসিয়ুস জুনিয়র, নাকি রদ্রি—কার হাতে উঠবে এবারের ব্যালন ডি’অর? নাকি তাঁদের পেছনে ফেলে হাসবেন জুড বেলিংহাম! যাঁর হাতেই উঠুক, ব্যালন ডি’অর যে নতুনের হাতে উঠছে, সেটি নিশ্চিত।
কখনো খুদে জাদুকর কখনোবা এলিয়েন। প্রায় দুই দশক ফুটবলপ্রেমীদের বুঁদ করে রেখেছিলেন ডান আর বাম পায়ের জাদুতে। ক্যারিয়ারের শেষলগ্নেও এখনো তারা থেকে মহাতারকা হয়ে ঔজ্জ্বল্য ছড়াচ্ছেন লিওনেল মেসি ও ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। কিন্তু বয়স তো কখনো আপস করে না। নক্ষত্রেরও একদিন পতন হয়।
একদিন আগে ব্রাজিলকে জেতালেন রদ্রিগো। গত মৌসুমে রিয়াল মাদ্রিদের লা লিগা ও চ্যাম্পিয়নস লিগের শিরোপা অর্জনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল এই তরুণ ফরোয়ার্ডের। তারপরও ব্যালন ডি’অরের মনোনয়ন পাওয়া ৩০ জনের তালিকায় সুযোগ হয়নি রদ্রিগোর।
২০২২ ফুটবল বিশ্বকাপ জিতেই সব অপূর্ণতা দূর করেছেন লিওনেল মেসি। এরই ধারাবাহিকতায় একের পর এক পুরস্কার জিতে চলেছেন মেসি। এ বছরের ৩০ অক্টোবর আর্জেন্টিনার বিশ্বজয়ী ফুটবলার জিতেছেন ক্যারিয়ারের অষ্টম ব্যালন ডি’অর।
লিওনেল মেসির ক্যাবিনেটে কত ট্রফি, তা কি তিনি নিজে গুনে শেষ করতে পারবেন? এ ক্ষেত্রে অধিকাংশের উত্তর ‘না’ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। ক্যারিয়ারে প্রতি বছরই কোনো না কোনো পুরস্কার তিনি জিতেছেন। আটবার তো জিতেছেন ব্যালন ডি’অর।
গতকাল প্যারিসে অমরত্বের পথে হেঁটেছেন লিওনেল মেসি। ক্যারিয়ারের অষ্টম ব্যালন ডি’অর হেসেছে তাঁর হাতে। অমরত্বের পানে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর সঙ্গে মেসির ব্যালন ডি’অরের ব্যবধানটা এখন তিন। মেসিকে ছোঁয়া এখন রোনালদোর জন্য প্রায় অসম্ভব।
বিশ্বকাপ জয়ের পর লিওনেল মেসি জানিয়েছিলেন, ব্যালন ডি’অর নিয়ে ভাবছেন না। আর্জেন্টাইন অধিনায়ক না ভাবলেও এবারও তাঁর শোকেসেই জায়গা পেতে পারে ফুটবল বিশ্বের ব্যক্তিগত নৈপুণ্যের এই পুরস্কার।
ব্যালন ডি’অরের সঙ্গে লিওনেল মেসির সখ্যতা দীর্ঘ সময়ের। সাত বার ব্যালন ডি’অর জিতে ইতিমধ্যে তালিকায় তিনি সর্বেসর্বা। বয়স ৩৬ হলেও পারফরম্যান্সে কোনো পড়তি নেই আর্জেন্টাইন সুপারস্টারের। বয়সের সঙ্গে তীক্ষ্ণ মস্তিষ্ক আর অভিজ্ঞতায় গত দুই বছরে আর্জেন্টিনার কোপা আমেরিকা, ফিনালিসামা এবং বিশ্বকাপের সোনালি ট্রফি
কাতার বিশ্বকাপ জয়ের পর থেকেই প্রশংসায় ভাসছেন লিওনেল মেসি। একের পর এক পুরস্কারও পেয়ে চলেছেন মেসি। আর্জেন্টিনার বিশ্বজয়ী ফুটবলারের ক্যাবিনেটে পুরস্কার আরও বাড়বে বলে মনে করেন গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্তিনেজ।
ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ও লিওনেল মেসি মিলে ফুটবল ইতিহাস পাল্টে দিয়েছেন—এ কথা আজ কে না জানে। এবার নিজেও এমন মন্তব্য করলেন আল-নাসরের পর্তুগিজ ফরোয়ার্ড। গত রাতে চলতি বছরের ব্যালন ডি’অরের জন্য ৩০ জনের তালিকা প্রকাশের পর কথাটি বললেন রোনালদো।
ব্যালন ডি অর জয়ের রেকর্ডে এখনো শীর্ষে আছেন লিওনেল মেসি। আন্তর্জাতিক ফুটবল, ক্লাব ফুটবলে মেসির সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সও সংখ্যাটা বাড়িয়ে নেওয়ার পক্ষেই কথা বলছে। ২০২৩ ব্যালন ডি অর মেসির প্রাপ্য বলে মনে করেন ব্রাজিলিয়ান রোনালদো নাজারিও।
কাতার বিশ্বকাপ শুরুর আগে লিওনেল মেসি জানিয়েছিলেন এটাই তাঁর শেষ বিশ্বকাপ। কিন্তু চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর কিছুটা সুর পাল্টিয়েছিলেন আর্জেন্টাইন অধিনায়ক। তাছাড়া তাঁকে পরের বিশ্বকাপে দলে পেতে অনুরোধও করছিলেন কোচ স্কালোনিসহ সতীর্থরা। এতে আগামী বিশ্বকাপে খেলার সিদ্ধান্ত নিয়ে দ্বিধা দ্বন্দ্বে ছিলেন তিনি।